মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে ২০২৪

এশিয়া মহাদেশের উন্নত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ জীবিকা নির্বাহের জন্য মালয়েশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক বন্ধুত্ব পূর্ণ হওয়ায় খুব সহজেই বাংলাদেশের নাগরিক মালয়েশিয়ার বিভিন্ন ভিসার মাধ্যমে যেতে পারে।

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার দ্বারা লাইসেন্স প্রাপ্ত আনুমানিক প্রায় ২ হাজার ৭০০ এজেন্সি রয়েছে। যারা প্রতিনিয়ত মালয়েশিয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ভিসা তৈরি করে থাকে। তবে এই মালয়েশিয়া ভিসা তৈরি করতে তারা মোটা অংকের টাকা দাবি করে থাকে।

বর্তমানে মানুষ উন্নত চিকিৎসা, উচ্চশিক্ষা ও ভ্রমণ সহ ব্যবসায়িক কাজে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছে। অনেকেই আবার মালয়েশিয়া বসবাসের জন্য ফ্যামিলি ভিসার জন্য আবেদন করছে। তবে সব থেকে বেশি মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় মালয়েশিয়া যাচ্ছে।

মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বর্তমানে বিদেশগামী মানুষের মধ্যে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। অন্যান্য দেশের মত মালয়েশিয়া যেতে ভিসা ও বিমান ভাড়া সহ বেশ কিছু জায়গায় লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। বিভিন্ন এজেন্সির সিন্ডিকেটের কারণে ভিসা তৈরীর খরচ দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে ২০২৪ সালে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ পূর্বের তুলনায় কমবে।

কেননা মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন বিন ইসমাইল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সরকার অনুমোদিত বেশ কিছু বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এতোদিন ধরে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ভিসা তৈরি সংক্রান্ত বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করতো। তবে বর্তমানে তাদের ছাড়া নিয়োগকর্তারাই সরাসরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবে।

যার ফলশ্রুতিতে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ অনেকাংশেই কমবে। বর্তমানে ভিসা তৈরীর ব্যয় ও বিমান ভাড়া সহ আনুষাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে মালয়েশিয়া যেতে সর্বনিম্ন প্রায় ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে বর্তমান ২০২৪ সালে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ কমে সর্বনিম্ন প্রায় ৭ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৮ লাখ টাকায় দাঁড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত

বৈধভাবে অন্য দেশে প্রবেশ করতে সে দেশের বৈধ ভিসা থাকা সব থেকে বেশি জরুরী। মালয়েশিয়ান ভিসা তৈরি করতে পূর্বে লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হতো। ভিসা আবেদন ফি পর্যন্ত হাতের নাগালের বাইরে ছিল। বর্তমানে তা পুনরায় হাতের মুঠোয় চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরকারি ও বেসরকারি দুই ভাবেই মালয়েশিয়ার ভিসার অনুমোদন দেওয়া হয়। সরকারিভাবে ভিসা তৈরির খরচ কম হলেও বেসরকারি ভাবে তা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে বেসরকারি ভাবে ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন প্রায় ৬ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ হয়। অপরদিকে সরকারি ভাবে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় ভিসা তৈরি করা যায়।

সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বাংলাদেশের বেকারত্বের হার বর্তমানে দিন দিন বেড়ে চলেছে। বেকারত্বের হার কমাতে বাংলাদেশ সরকার যুব উন্নয়ন কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যুব উন্নয়ন কেন্দ্রে ফ্রিতে প্রশিক্ষণ পাওয়া গেলেও মালয়েশিয়া যেতে বেশকিছু টাকা খরচ করতে হয়।

বাংলাদেশ সরকার অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ায় সরকারিভাবে বিদেশ যাওয়ার চাহিদা অনেক বেশি। চাহিদা বেশি হওয়ায় বিভিন্ন অসাধু সরকারি কর্মকর্তা ঘুষ নেওয়ার মতো অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে। সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যেতে আনুমানিক প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা লাগে। তবে অনেক সময় বিভিন্ন অসাধু কর্মকর্তার কারণে এই খরচ ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা হয়ে থাকে।

মালয়েশিয়া কোন কাজের বেতন কত?

বর্তমানে মালয়েশিয়াতে অল্প কাজ করে অধিক টাকা উপার্জন করা যায়। কাজের ধরনের উপর বেতন নির্ধারিত হয়। যেমন মালয়েশিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গেলে সর্বনিম্ন ৩০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ অথবা ৯০ হাজার টাকা ইনকাম করা যায়

অপরদিকে আবার সরকারি চাকরিতে আনুমানিক প্রায় ১ লাখ টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার অথবা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের সব থেকে বেশি নিম্ন শিক্ষার মানুষ মালয়েশিয়া যায়। ওভারটাইম দিয়ে এই সকল নিম্ন শিক্ষার মানুষও মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।

মালয়েশিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে

সকল বয়সী মানুষের মালয়েশিয়া যাওয়ার অনুমতি রয়েছে। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার ক্ষেত্রে বয়স সীমা নির্ধারণ করা আছে। কেননা মালয়েশিয়াতে শিশু শ্রম সম্পন্ন নিষিদ্ধ এবং ১৮ বছরের কম বয়সীদের কে শিশু বলা হয়। তাই মালয়েশিয়া যেতে হলে ভোটার আইডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী সর্বনিম্ন বয়স ১৮ হতে হবে।

শেষ কথা

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষের অভিজ্ঞতা না থাকায় প্রায় সকলেই বিভিন্ন দালাল বা এজেন্সির দ্বারা মালয়েশিয়া যাওয়ার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে। এর সুযোগ নিয়ে অনেক অসাধু দালাল মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তাই মালয়েশিয়া যাওয়ার ক্ষেত্রে এজেন্সি বা দালাল থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

Leave a Comment

Share via
Copy link