শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণ, কাজ ও বিজনেস সহ আরও বেশ কয়েকটি ভিসায় কুয়েতে আসা যাবে। বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য কুয়েতের ভিসা চালু থাকায়, যেকোনো কুয়েতের ভিসা বানিয়ে এই দেশে আসতে পারবেন। এখানে আসতে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে এবং কত টাকা খরচ হবে এগুলো জানা প্রয়োজন।
ভিসা আবেদনের মাধ্যম ও ভিসার ধরনের উপর ভিত্তি করে ভিসার খরচ নির্ভর করে। বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে আসার জন্য নুন্যতম ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা লাগে। তবে এর থেকে কম খরচেও কুয়েত আসা যায়। কুয়েতের ভিসা আবেদন, প্রসেসিং ও বিমান ভাড়া সহ কুয়েত আসতে কত টাকা লাগবে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে
এটি এশিয়া মহাদেশে হওয়ায় ভিসা খরচ খুব বেশি নয়। বর্তমানে ডলারের রেট বেড়ে যাওয়ায় পূর্বের তুলনায় প্রায় ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। বর্তমানে কুয়েতের একটি কাজের ভিসার জন্য প্রায় ৬ লাখ টাকা লাগে। কুয়েতে কাজের জন্য বেশ কয়েকটি ভিসা আছে। যেমন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, শ্রমিক ভিসা, কৃষি ভিসা ও ফ্যাক্টরি ভিসা ইত্যাদি। সাধারণ মানের ভিসা গুলো পেতে ৬ লাখ টাকা খরচ হবে। আর এই সকল ভিসায় কুয়েত যেতে মোট ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা লাগে। কুয়েতের ভিসা খরচ ৭ লাখ এবং বিমান ভাড়া ও বাকি খরচ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে নুন্যতম ৮ লাখ টাকা লাগবে।
- শ্রমিক ভিসা ৬ লাখ টাকা
- কৃষি ভিসা ৬ লাখ টাকা
- লেভার ভিসা ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ৭ লাখ টাকা
- কোম্পানি ভিসা ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা
- হোটেল ও রেস্টুরেন্ট ভিসা ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা
- ইলেক্ট্রনিক্স ও ইলেকট্রিকাল ভিসা ৮ লাখ টাকা
- রাজমিস্ত্রি ও কাঠমিস্ত্রি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা
- মেডিকেল ভিসা ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা
- বিজনেস ভিসা ৬ লাখ টাকা
সরকারি ভিসায় কুয়েত যেতে কত টাকা লাগে
যেকোনো দেশের ভিসা সরকারি ও বেসরকারি ভাবে বানানো যায়। সরকারি ভিসার খরচ কম কিন্তু ভিসার পরিমাণ অনেক কম। আর বেসরকারি ভিসার খরচ বেশি ও ভিসার পরিমাণও বেশি। যে সকল ভিসা কুয়েত সরকার থেকে বাংলাদেশ বোয়েসেলে নিয়োগ দেওয়া হয়, সেগুলো সরকারি ভিসায়। কাজের মধ্যে ওয়ার্ক পারমিট একটি সরকারি ভিসা। এছাড়া সিজনাল ও কিছু কোম্পানি ভিত্তিক ভিসা গুলোও সরকার দ্বারা নিয়োগ করা হয়। সরকারি ভিসায় কুয়েত যেতে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা লাগে। তবে ভিসার দাম কাজের নিয়োগের উপর নির্ভর করে কম বেশি হবে।
কোন ভিসায় বাংলাদেশ থেকে কুয়েতে কম খরচে যাওয়া যাবে?
সাধারণ যেকোনো চাকরি বা কাজের ভিসায় কুয়েত যেতে সর্বনিম্ন ৬ লাখ টাকা লাগবে। তবে এমন কিছু ভিসা আছে যেগুলোর মাধ্যমে ৪ লাখ টাকার মধ্যেই কুয়েত যেতে পারবেন। এজন্য সরকারি ভাবে ভিসা বানাতে হবে। তবে সরকারি ছাড়া স্টুডেন্ট ও টুরিস্ট ভিসা কম খরচে পাওয়া আবে। বর্তমানে কুয়েতের স্টুডেন্ট ভিসার দাম ৩ লাখ টাকা। স্টুডেন্ট ভিসায় কুয়েত যেতে মোট ৪ লাখ টাকা লাগবে। আর ভ্রমণের জন্য টুরিস্ট ভিসায় কুয়েত যেতে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাগবে।
সিজনাল ও নন সিজনাল ভিসায় কুয়েত যেতে কত টাকা লাগবে
সিজনাল ও নন সিজনাল এক ধরনের কাজের ভিসা। যেখানে একন বাংলাদেশি নাগরিক নির্দিষ্ট কয় দিন কুয়েতে কাজ করতে পারবে। কুয়েত থেকে অনেক সময় এই দুই ধরনের ভিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। সিজনাল ভিসা ৬ মাস বা ১২ মাসের মেয়াদ থাকবে। এই সময় একজন কর্মি কুয়েতে কাজ করতে পারবেন। ভিসাত মেয়াদ শেষ হলে তাকে পুনিরায় দেশে ফিরে আসতে হবে।
তবে নন সিজনাল ভিসা এর ব্যাতিক্রম। এই ভিসায় নিয়োগ প্রাপ্ত কর্মি ২ থেকে ৪ বছরও কাজ করতে পারবে। ঐ কোম্পানির কাজ শেষ হলে অন্য কোনো কাজে যুক্ত হতে পারবে। এই সিজনাল ভিসায় কুয়েত যেতে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লাগবে। আর নন সিজনাল এ প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হবে। এটা কমাপ্নির নিয়োগ ও কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কত টাকা বিমান ভাড়া লাগে
কুয়েত ও বাংলাদেশের মোট দূরত্ব ৪২৮৬ কিলো মিটার। যার কারণে আকাশ পথে কুয়েত যেতে হবে। আর আকাশ পথে যেতে খরচ একটু বেশি লাগবে। বাংলাদেশ থেকে কুয়েত রুটে প্রায় ৭ টি আনতর্জাতিক বিমান রয়েছে। বিমানের ধরন ও টিকিটের ক্যাটাগরি উপর বিমান ভাড়া নির্ভর করে। এছাড়া ডলারের রেট বেশি থাকলে বিমান ভাড়াও বেশি লাগে। বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে সর্বনিম্ন ৭০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা লাগে। ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যাওয়ার বিমানের টিকিট পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে কি কি লাগবে?
প্রথমে একজন বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। এরপর তার ব্যাক্তিগত তথ্য, ছবি ও আকজের ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। ভিসা আবেদনের পূর্বে একটি পাসপোর্ট তৈরি করা লাগবে। সাথে মেডিকেল টেস্ট ও চাকরির আবেদন পত্র সংগ্রহ করতে হবে। এছাড়া আরও কিছু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে।
- এনআইডি বা জন্ম সনদ এর ফটো কপি।
- সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদী পাসপোর্ট।
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। (বাকগ্রাউন্ড রঙ্গিন)
- মেডিকেল টেস্ট এর রিপোর্ট।
- পুলিশ ক্লিয়ারনেস।
- ব্যাকং ব্যালেস এর স্টেটমেন্ট ।
- চাকরির আবেদন পত্রের ডকুমেন্ট।
- কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কাজগপত্র।
- ড্রাইভিং এর কাজ হলে বাংলাদেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স।
- ভিসা আবেদন পত্র।
কুয়েত যেতে এই ডকুমেন্ট গুলো প্রায় ভিসায় জন্য ব্যবহার করা হয়। ভিসা নিয়োগে অতিরক্ত কিছু উল্লেখ থাকলে সেগুলোও লাগবে। ভিসা নিয়োগের উপর নির্ভর করে কিছু ডকুমেন্ট পরিবর্তন হতে পারে।
কুয়েতে কাজের জন্য যেতে নুন্যতম বয়স থাকতে হবে। অয়ায়ারক পারমিট এর ক্ষেতে একজন কর্মির ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়স থাকতে হবে। কুয়েতে যাওয়ার জন্য ভিসা খরচ লাগবে ৬ থেকে ৭ লাখ। আর বিমান ভাড়া লাগবে প্রায় ১ থেকে ২ লাখ। সকল খরচ সহ বাংলাদেশ থেকে কুয়েত যেতে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা লাগবে।
আরও দেখুনঃ