ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে বলকান উপদ্বীপে গ্রিস রাষ্ট্রের অবস্থান। বাংলাদেশি নাগরিক শিক্ষা, চিকিৎসা, ভ্রমণ, কাজ ও পড়াশুনা সহ বেশ কয়েকটি ভিসায় গ্রিস যেতে পারবে। গ্রিসের যাওয়ার খরচ অনেক বেশি, তাই বাংলাদেশ থেকে খুব কম মানুষ গ্রিসে যায়। কম খরচে সরকারি ভাবে গ্রিসের ভিসা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে? বেসরকারি ভাবে বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাগে।
গ্রিসে যাওয়ার জন্য অনেক ধরনের ভিসা আছে। ভিসার ক্যাটাগরি ও আবেদনের উপর যাওয়ার খরচ নির্ভর করে। গ্রিসে এমন কিছু ভিসা আছে যার মাধ্যমে মাত্র ৪ লাখ টাকার মধ্যেই যেতে পারবেন। কোণ ভিসা খরচ কম, কিভাবে কম খরচে গ্রিস যাওয়া যাবে এবং বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনেনিন।
বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে ইউরোপের শুকল ভিসার দাম ও খরচ অনেক বেশি। তাই গ্রিস ইউরোপের দেশ হওয়ায় এই দেশে আসতে নুন্যতম ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন দেশের ডলারের মান বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভিসা খরচ বেড়েছে। ভালো মানের কাজের ভিসায় গ্রিস যেতে ২০২৪ সালে সর্বনিম্ন ১২ লাখ টাকা লাগে। তবে এমন অনেক ভিসা আছে, যাদের মোট খরচ ৮ লাখ টাকা এবং এই ভিসায় গ্রিস যেতে লাগবে ১০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে এটা সম্পূর্ণ ভাবে ভিসা আবেদনের মাধ্যমের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশি বেসরকারি এজেন্সি দ্বারা ভিসা বানালে প্রায় ৮ লাখ টাকা লাগে। তবে সরকারি ভাবে এভিসার খরচ হবে মোট ৪ লাখ টাকা। ভিসার জন্য ৬ লাখ টাকা লাগলেও বাংলাদেশি এজেন্সি ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা চার্জ করে। ফলে ভিসা খরচ বেড়ে যায়। সকল খরচ মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে।
সরকারিভাবে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে
যে সকল ভিসা সরকারি ভাবে বানানো যায় তাদের খরচ হয় প্রায় ৪ লাখ টাকা। তবে সব সময় সরকারি ভিসা থাকে না। তাই বাধ্য হয়ে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে ভিসা বানাতে হচ্ছে। অনেক সময় গ্রিস সরকার থেকে বাংলাদেশে ভিসার নিয়োগ আসে। তখন যোগ্যতা সম্পর্ন ব্যাক্তি মাত্র ৫ লাখ টাকার মধ্যেই গ্রিসের ভিসা পেয়ে যায়। সরকারিভাবে গ্রিস যেতে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাগে। ভিসার ক্যাটাগরির উপর ভিত্তি করে এই খরচ কম বেশি হবে। ৬ লাখ টাকার মধ্যেই অবশ্যই গ্রিসের সরকারি ভিসা পাওয়া যাবে।
ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগবে
ইউরোপের দেশে ভ্রমণে যেতে খরচ তেমন বেশি নয়। তবে তবে কাজ বা চাকরির ভিসার দাম অনেক বেশি। মাত্র ৪ থেকে ৫ লাখ টাকার মধ্যেই গ্রিস টুরিস্ট ভিসার অফার করে। বাংলাদেশি যেকোনো ভিসা এজেন্সি থেকে ৪ লাখ টাকার মধ্যেও গ্রিসের ভিজিট ভিসা পাওয়া যায়। আর সরকারি ভাবে ভিসা পেলে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হবে। ভিসার মেয়াদ এর উপর নির্ভর করে ভিসার দাম কম বেশি হতে পারে। এখন ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা লাগেবে।
পড়াশুনার জন্য বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা খরচ হবে
গ্রিসের যদি কোনো ভিসা কম দামে পাওয়া যায় তা হলো স্টুডেন্ট ভিসা। কেননা মাত্র ৪ লাখ টাকার মধ্যেই গ্রিসের স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া যাচ্ছে। আর যদি সরকারি ভাবে স্টুডেন্ট ভিসা বানাতে পারেন তাহলে আপনার ১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা লাগবে। পড়াশুনার জন্য বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে নুন্যতম ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ হবে। স্কোলারশীপের মাধ্মে ও আইএলটিইএস স্কোরের উপর ভিত্তি করে স্টুডেন্ট ভিসার খরচ আরও কম লাগতে পারে।
বেসরকারিভাবে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশে যত গুলো ভিসা এজেন্সি আছে তা হলো বেসরকারি। বেসরকারি সংস্থার ভিসা খরচ অনেক বেশি। বেসরকারিভাবে গ্রিস যেতে ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা লাগে। তাদের একটি ড্রাইভিং ভিসার খরচ প্রায় ৮ লাখ টাকা। সেই অনুযায়ী এই ধরনের এজেন্সি থেকে একটি কোম্পানির ভিসার খরচ প্রায় ১০ লাখ টাকা। বেসরকারিভাবে গ্রিসের ভিসা বানানর পূর্বে যাচাই করে নিতে হবে। তাহলে কিছুটা কম খরচে ভিসা পেতে পারেন।
গ্রিসের ভিসার দাম কত টাকা
ছোট কাজ থেকে শুরু করে বড় ধরনের কাজের সুযোগ আছে এই দেশে। গ্রিসে কাজের মানের পাশা-পাশি বেতনও অনেক ভালো। যার কারণে খরচ বেশি হলেও অনেকে গ্রিসে আসতে চায়। গ্রিসে আসার পূর্বে অবশ্যই কাজের দক্ষতা থাকতে হবে। সেই অনযুয়ায়ি ভিসার জন্য আবেদন করবেন। বর্তমান সময়ে বেশ কয়েকটি ভিসায় গ্রিসে আসতে পারবেন। কোন ভিসার দাম কত টাকা? কোন ভিসায় গ্রিস আসতে কত টাকা লাগবে ইত্যাদি দেখুন।
- কোম্পানি ভিসার দাম- ৮ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা।
- রেস্টুরেন্ট ও হোটেল ভিসার দাম ৮ লাখ টাকা।
- দ্রাভিং ভিসার দাম ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা।
- শ্রমিক, লেভার ও সাধারণ কাজের ভিসার দাম- ৭ লাখ টাকা।
- ফ্যাক্টরি, কল কারখানা ভিসার দাম- ৮ লাখ টাকা।
- ইলেকট্রিকাল ও ইলেক্ট্রনিক্স ভিসার দাম ৯ লাখ টাকা।
- সিজনাল ভিসার দাম ৮ লাখ টাকা।
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসার দাম ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে বিমান ভাড়া কত টাকা লাগবে
গ্রিসে যেতে হলে অবশ্যই বিমান ব্যবহার করতে হবে। বিমানের টিকিটের মূল্য পরিবর্তনশীল। সময়েরব সাথে বিমান ভাড়া কম বেশি হবে। গ্রিসে যাওয়ার জন্য অনেক ধরনের ফ্লাইট আছে। যদি ইকোনোমিক ফ্লাইটে যান তাহলে প্রায় ১ লাখ টাকা লাগবে। আর বিজনেস ক্লাসের বিমানে যেতে ৩ লাখ টাকা লাগবে। বিমানের ধরন ও সময় অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা বিমান ভাড়া লাগবে।
বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কি কি লাগবে
গ্রিস যাওয়া তেমন সহজ কাজ নয়। আর গ্রিসের ভিসা সবাইকে দেওয়া হয়। গ্রিস সরকার ও তাদের কোম্পানি গুলো সব সময় যোগ্য বযাক্তিদের নিয়োগ দেয়। কাজের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও যোগ্যতা থাকলে খুব সহজে গ্রিসের ভিসা পাবেন। গ্রিস যেতে আপনার কাছে এই ডকুমেন্ট গুলো থাকতে হবে। গ্রিস যেতে কি কি লাগবে জেনে নিন।
- সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদী পাসপোর্ট।
- সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি।
- এনআইডি বা জন্ম সনদের ফটোকপি।
- পুলিশ ক্লিয়ারনেস।
- মেডিকেল রিপোর্ট।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- কাজের অভিজ্ঞতার ডকুমেন্ট।
- ভিসা আবেদন পত্র।
- চাকরির অফার লেটার।
ভিসা নিয়োগের উপর নির্ভর করে আরও কিছু ডকুমেন্ট লাগতে পারে। তবে সব ধরনের ভিসার জন্য উপরোক্ত কাজগপত্র লাগবেই। ভিসা আবেদনের পূর্বেই সকল ধরনের ডকুমেন্ট সংগ্রহ করে নিবেন। কিছু ক্ষেত্রে শিকামূলক ডকুমেন্ট ও সার্টিফিকেট লাগতে পারে।
কোন ধরনের ভিসার মাধ্যমে গ্রিসে যাবেন, তার উপর ভিসা খরচ নির্ভর করে। কম খরচে গ্রিস যেতে স্টুডেন্ট ও টুরিস্ট বং সরকারি ভিসা বানাতে হবে। আর উন্নতমানের চাকরির জন্য গ্রিস যেতে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা লাগবে। সাধারণ মানের ভিসার মাধ্যমে ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা দিয়ে গ্রিস যেতে পারবেন।
আরও দেখুনঃ